কুড়িগ্রাম-২ আসনে প্রধান দু’দলের প্রার্থীকে নিয়ে দলের ভিতরে টানাপোড়ন

 কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

১১-১২-১৮ কুড়িগ্রামে বিজয়ের মাসে দোয়া মাহফিল ও আলোচনাসভার মধ্যদিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করল জেলা আওয়ামীলীগ। গুরুত্বপূর্ণ কুড়িগ্রাম-২ আসনে মহাজোটের একক প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদকে বরণ করে অনুষ্ঠানের সূচনা করল তারা। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় কুড়িগ্রাম কলেজমোড়স্থ বিজয়স্তম্ভে নেতারা ভেদাভেদ ভুলে হাতে হাত ধরে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দেয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মো: জাফর আলী, যুগ্ম সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, এড.এসএম আব্রাহাম লিংকন, শেখ বাবুলসহ সিনিয়র সকল নেতাই। চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটি আসনই উন্মুক্ত রাখা হলেও সদর উপজেলা, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-২ আসনে আওয়ামীলীগের কোন নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এই আসনে সাবেক এমপি মো: জাফর আলী সারা বছর ধরে মাঠ গুছিয়ে আনলেও প্রধানমন্ত্রী মহাজোটের প্রার্থীকেই বেছে নেন। এনিয়ে আওয়ামীলীগের তৃনমূলে ছিল চরম ক্ষোভ। কারণ মহাজোটের প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। নির্বাচনের আগে দল পাল্টিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তিনি। এরপর মহাজোটের প্রার্থী হওয়ায় দলের অভ্যন্তরে নানান কানাঘুষা শোনা গেলেও আজ তার অবসান ঘটল নেতৃস্থানীয়দের উপস্থিতির মধ্যদিয়ে। এই আসনে ঐক্যফ্ধসঢ়;্রন্টের অপর প্রার্থী সাবেক জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) আমসাআ আমিন। তিনি ভোটের আগে গণফোরামে যোগ দিয়ে এই আসন থেকে ধানেরশীষ প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন। দুজন প্রার্থীকে নিয়েই দলের ভিতরে কোন্দলের কথাবার্তা শোনা গেলেও মহাজোটের প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদকে প্রকাশ্যে বরণ করায় মহাজোটে আপাতত: সমস্যা মিটে গেল। কিন্তু ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী আমসাআ আমিন রয়েছেন চরম বেকায়দায়। দলের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ থাকায় সাংবাদিকদের কাছেও মুখ খুলছেন না তিনি। মঙ্গলবার জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের সাথে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। এখন শেষ পর্যন্ত কি হয় তার অপেক্ষায় রয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। এদিকে বিরোধ প্রকাশ্য আকার ধারণ করে এই আসন থেকে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদকে প্রার্থী না করায়। তৃণমূলে জনপ্রিয় এই নেতাকে প্রার্থী করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করে জেলা বিএনপির একাংশ। মূল অংশ নিরব থাকলেও তারাও চেয়েছিল সোহেল প্রার্থীতা পাক। শেষ পর্যন্ত দলছুট ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে পরবর্তীতে দলত্যাগ করে তার গণফোরামে যাওয়া এবং ধানের শীষ প্রতীক পাওয়াটা কেউ মেনে নিতে পারছে না। একারণে বিএনপি’র একটি অংশ তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে তার পক্ষে কাজ না করার ঘোষণা দেয়া হয় খোদ জেলা বিএনপি অফিস থেকেই। এরকম যখন পরিস্থিতি তখন দোদুল্যমনতায় রয়েছে সাধারণ ভোটাররা। অবশ্য বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন এই সংকটের অবসান দ্রুতই হবে। বর্তমান সরকারকে গদি থেকে নামাতে হলে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা দরকার। কারণ ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। খালেদা জিয়ার মুক্তি আর তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে এসব দেখলে চলবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment